প্রকাশিত: Tue, Feb 14, 2023 5:05 PM
আপডেট: Sat, May 10, 2025 9:26 AM

বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে আয়কর বিভাগের তল্লাশি, সিলগালা

মোশাররফ হোসাইন: ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের (বিবিসি) দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছেন ভারতের আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। দুই কার্যালয় থেকে সাংবাদিকদের ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে। তল্লাশি চালানোর পর উভয় কার্যালয় সিলগালা করে দিয়েছেন তারা। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিবিসির ওই দুই কার্যালয়ে একযোগে অভিযান চালান আয়কর কর্মকর্তারা। এ ঘটনার পর দিল্লির সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এএফপি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিবিসির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কর ও তথ্য স্থানান্তর মূল্যে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তার জেরেই এই তল্লাশি চালিয়েছে আয়কর দপ্তর। সেই সঙ্গে দুই অফিসের সাংবাদিকরা যেন নিজেদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ না করেন, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আয়কর দপ্তরের তল্লাশির পর বিবিসি দিল্লি ও মুম্বাই শাখার সাংবাদিকদের উদ্দেশে লিখিত বার্তা দিয়েছে লন্ডনের বিবিসি হেডকোয়ার্টার। তারা বলেছে, ‘আমরা বিবিসি ভারতের দিল্লি ও মুম্বাইসহ অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের কর্মীদের অনুরোধ করছি আপনারা আতঙ্কিত হবেন না এবং সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার ঝামেলায় জড়াবেন না। পুরো পরিস্থিতি আমরা সামাল দিচ্ছি।।

কর কর্মকর্তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কিছু ব্যাপারে অস্পষ্টতা ছিল। সেসব দূর নিরীক্ষার জন্য আমরা এখানে এসেছি। বিবিসির ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য আমরা খতিয়ে দেখব। এটা কোনো তল্লাশি নয়।’ এনডিটিভি

এদিকে তল্লাশির এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দলটির অফিসিয়াল টুইটারে বলা হয়, প্রথমে বিবিসির ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ করা হলো। এখন বিবিসি কার্যালয়ে অভিযান চালালো আয়কর বিভাগ। এটি মূলত একটি অঘোষিত জরুরি অবস্থা।

পাশাপাশি, বর্তমানে নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির জালিয়াতি ও লুটপাট ঘিলে যখন ভারতের রাজনীতি সরব; সে সময় বিবিসির কার্যালয়ে অভিযানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার জনগণের  মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছে বলেও মনে করছে কংগ্রেস।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, এখানে যখন আমরা আদানি-হিন্ডেনবার্গ ঝামেলা মেটাতে জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির দাবি তুলছি, তখন বিবিসি কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে! এটা হলো বিনাশকালে বুদ্ধিনাশের একদম যোগ্য উদাহারণ।

ভারতের গুজরাট দাঙ্গায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ‘ইন্ডিয়া: মোদি দ্য কোয়েশ্চেন’ নামের একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে বিবিসি। এই তথ্যচিত্র প্রকাশের পর ভারতে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। চলমান এই বিতর্কের মাঝেই বিবিসির ভারতীয় দুই কার্যালয়ে অভিযান চালালেন আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা।

ভারত সরকার তথ্য প্রযুক্তি আইনের অধীনে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে এরই মধ্যে তথ্যচিত্রটির লিংক শেয়ার করা ভিডিও ও টুইট ব্লক করেছে। যদিও এখনো ওই তথ্যচিত্রটি ভারতে নিষিদ্ধ করা হয়নি, তবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ব্লক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব